উত্তম সরকার, বগুড়া প্রতিনিধি।- বগুড়ায় করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা প্রদান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রথম করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জিয়াউল হক, পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা, শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য প.প কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদেরসহ বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মী ও অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশনকৃতরা।
৭ ফেব্রুয়ারি) রবিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে ও শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। এসময় বগুড়া জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং হাসপাতালের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পকিল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে টিকা প্রদান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত আলী সেখ। অন্যান্যদের মধ্যে উপজলো আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ জামাল সিরাজী, থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় শেরপুর উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা, ডাক্তার, গণমাধ্যম কর্মী ও শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। পরে স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদেরের শরীরে প্রথম টিকা পুশ করে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
উল্লেখ্য, বগুড়ার ১২টি উপজেলার জন্য এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৮শ ভায়েল করোনার টিকা এসেছে যা দিয়ে ১লাখ ৮ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া যাবে। এ পর্যন্ত জেলায় ৬ হাজার ১শ ৬৬ জন অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন গওসুল আজিম চৌধুরী। বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি জেলা শহরসহ উপজেলা পর্যায়ে করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকা প্রদান করা হয়। এই জন্য চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য-সহকারীসহ প্রয়োজনীয় সকল কিছুই প্রস্তুত রয়েছে। ২৯ জানুয়ারি বগুড়ায় প্রথম চালানের টিকা এসে পৌঁছেছে। ১০ হাজার ৮০০ ভায়াল টিকায় দিয়ে মোট ১ লাখ ৮ হাজার ডোজ টিকা প্রদান করা হবে। করোনার টিকা প্রতিজনকে এক মাস পরপর দুবার করে নিতে হয় বলে বগুড়ার প্রায় ৫৪ হাজার নির্দিষ্ট ব্যক্তি করোনার টিকা নিতে পারবেন। বগুড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই স্টোর সূত্রে জানা যায়, ৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়ার আদমদীঘিতে ৬২০টি ভায়াল যা দিয়ে ৬ হাজার ১৯৮ জনকে টিকার ডোজ। ধুনটে ৯২৯টি ভায়াল, দুপচাঁচিয়ায় ৫৬১টি ভায়াল, সারিয়াকান্দিতে ৮৬০ ভায়াল ও সোনাতলায় ৫৯২ বরাদ্দকৃত ভায়াল টিকা। এছাড়া বগুড়ার সদর উপজেলার জন্য ১ হাজার ৭৬৩টি ভায়াল যা দিয়ে ১৭ হাজার ৬২৫ জনকে ডোজ দেওয়া যাবে। গাবতলী উপজেলার জন্য ১০১৫টি ভায়াল, কাহালু উপজেলার জন্য ৭০৬টি ভায়াল, নন্দীগ্রাম উপজেলার জন্য ৫৭৪টি ভায়াল, শাহজাহানপুর উপজেলার জন্য ৯২০টি ভায়াল, শেরপুর উপজেলার জন্য ১ হাজার ৫৭টি ভায়াল, শিবগঞ্জ উপজেলার জন্য ১ হাজার ২০৩টি ভায়াল বরাদ্দ করা হয়েছে। এদিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম কাদের টিকা গ্রহনের পূর্বে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এরইমধ্যে টিকা প্রয়োগের জন্য গঠিত টিমের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা প্রস্তুত রয়েছে। প্রথমধাপে পাওয়া এই টিকাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনাকালের সম্মুখসারির লোকজনকে দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উজ্জ্বল কুমার ঘোষ জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করা যাবে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সিভিল সার্জন কার্যালয়, মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রে।
Leave a Reply