উত্তম সরকার, বগুড়া প্রতিনিধি।- বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সার্বক্ষনিক চিন্তা ছিল এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য। তিনি নজর দিয়েছিলেন কৃষি খাতের দিকে। আর এ জন্যই আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বনির্ভর। তিনি ১৯৫৪ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের যুক্তফ্রন্ট সরকারের কৃষি, পরিবেশ ও সমবায় মন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কৃষি ছাড়া এদেশের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব না। তার ভাবনার সুদুর প্রসারী পরিকল্পনার সুফল আজ আমাদের চোখের সামনে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কৃষিতে উন্নয়নের বিপ্লব আনতে চায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বে পথ অনুসরণ করেই আমরা পেরিয়ে এসেছি সাফল্যের এই সোনালী পথ।
তিনি আরো বলেন , জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের ব্যপক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা থাকা স্বত্তেও করোনা দুর্যোগের কারণে আমরা যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করতে পারিনি। তাই কৃষি প্রধান সবুজ বাংলার বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথম বারের মতো আমরা বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতে একটি নতুন ধরনের চিত্রকর্ম আঁকতে যাচ্ছি। যা বিশ্ববাসীর সামনে আবারো মাটি ও মানুষের তথা কৃষক দরদী হয়ে উঠবে বঙ্গবন্ধু। এটি হবে জাতির পিতার শত জন্মবার্ষিকীর এক অনন্য উদযাপন। সেই সাথে গোটা বিশ্বে সর্বপ্রথম শস্যচিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্ এ ঠাঁই নেবে এবং দেশের জন্য অর্জিত হবে একটি নতুন ইতিহাস।
২৯ জানুয়ারী শুক্রবার বেলা ১২ টায় ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু চারা রোপণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও আহবায়ক এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিবর রহমান, বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু প্রমূখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বালেন্দা এলাকায় ১২০ বিঘা জমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শস্যচিত্র আঁকতে ধানের চারা রোপণ করা হয়। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় বালেন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্ত¡রে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান বক্তা হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন দেখেছেন স্বাধীন ভূ-খন্ডের মানুষ খেয়েপরে বাচবে, এজন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে কৃষিতে উন্নয়নের বিপ্লব আনতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পথ অনুসরণ করেই আমরা পেরিয়ে এসেছি সাফল্যের এই সোনালী পথ, এবং গড়ে উঠছে সোনার বাংলায়।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও আহবায়ক, ‘শস্য চিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’ বাস্তবায়ন জাতীয় পরিষদ ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, শেখ হাসিনা শুধু এদেশের ১৮ কোটি মানুষের নেতা হিসেবে বিশ্বের কাছে সুনামধন্য নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের ব্যপক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা থাকা স্বত্ত্বেও করোনা দুর্যোগের কারণে আমরা যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করতে পারিনি। তাই কৃষি প্রধান সবুজ বাংলার বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথম বারের মতো আমরা বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতে একটি নতুন ধরনের চিত্রকর্ম আঁকতে যাচ্ছি। যা বিশ্ববাসীর সামনে আবারো মাটি ও মানুষের তথা কৃষক দরদী হয়ে উঠবে বঙ্গবন্ধু। এটি হবে জাতির পিতার শত জন্মবার্ষিকীর এক অনন্য উদযাপন। জাতির পিতা সারাজীবন আমাদের মাঝে আছেন, গোটাবিশ্বে সর্বপ্রথম শস্যচিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্ এ ঠাঁই নেবে এবং অর্জিত হবে বাংলাদেশে একটি নতুন ইতিহাস।
শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির রোপনে শষ্য চিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে এবং ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের সহযোগিতায় ব্যতিক্রমী এই কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরী উদ্দেশ্য নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর শৈল্পিক উদযাপন ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। সৃষ্টিশীল, নতুন, সুবিশাল প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশ তথা গোটা বিশ্বের দৃষ্টি আর্কষণ, করোনা মহামারীর এই সময়ে মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে পরিমিত আয়োজনে এ বিশাল শিল্প সৃষ্টির মাধ্যমে গিনেজ বুক অব বিশ্ব রেকর্ড অর্জন। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর একটি কৃষিজ উদযাপন কৃষকদের অনুপ্রাণিত করবে আয়োজক কমিটি সুত্রে জানা গেছে।
যেভাবে বাস্তবায়ন করা শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি: বালেন্দা গ্রাম এলাকায় দুই রংয়ের সোনালী ও বেগুনী ধান গাছ রোপন করা হয়েছে ইতোমধ্য। এজন্য কৃষি অধিদপ্তর থেকে ১০০জন বিএনসিসি ক্যাডেট সদস্যদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। লে আউট বা নকশা অনুযায়ী সোনালী ও বেগুনি রংয়ের ধান ব্যবহার করে আঁকা হবে বিশাল পোর্ট্রেট । চারা রোপনের পর থেকে পুরো ক্যানভাসটিকে ছোট ছোট গ্রিডে ভাগ করে লে আউটের পর বিশেষজ্ঞ টীমের মাধ্যমে ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সমন্বয়ে ধাপে ধাপে পরীক্ষা করা হবে।
উল্লেখ্য গিনেজ বুক বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী ২০১৯ সালে চীনে ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র তৈরী করা হয়েছিল। তাইতো বাংলাদেশ শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরী করতে এবছর প্রায় ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট বা ১ লাখ ২০ হাজার বর্গমিটার এবং ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৩০০ মিটার প্রস্থ হবে। শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি রোপনে সঠিক ও বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পূর্নাঙ্গ ফসল আকারে উজ্জীবিত হলে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘‘ শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু” এর ভিডিওসহ প্রয়োজনীয় দলিল গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে এবং ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে বাংলাদেশ নতুন বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করবে।
Leave a Reply